গুম হওয়া প্রতিটি ব্যক্তিকে দ্রুত খুঁজে বের করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশে বিরোধী মতের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার সাত শতাধিক মানুষকে গুম করা হয়েছে।
গুম বা নিখোঁজ ইস্যুতে বিদেশিদেরও আগ্রহ রয়েছে। ২০২২ সালের আগস্টে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেট বাংলাদেশ সফর করেন এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুম বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ বিভিন্ন সময়ে গুমের শিকার ব্যক্তিদের তালিকা বাংলাদেশ সরকারকে হস্তান্তর করেছে।
হাসিনা সরকারের পতনের পর জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের পুত্র সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী ও জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নির্বাহী পরিষদ সদস্য শহীদ মীর কাসেম আলীর পুত্র ব্যারিস্টার আরমান আহমদ বিন কাসেম দীর্ঘ ৮ বছর পর গুম অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তবে জামায়াত নেতা হাফেজ জাকির হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা আল মোকাদ্দাস ও মোহাম্মদ ওলিউল্লাহ, বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী ও সাবেক কমিশনার চৌধুরী আলমসহ বহু মানুষ এখনো গুম অবস্থায় আছেন।
গুম ও অপহরণকৃত ব্যক্তিদের পরিবার-পরিজন উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য হাসিনা সরকারের কাছে বারবার আবেদন করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে পাঁচ সদস্যের একটি কমিশন গঠন করেছে। ‘কমিশন অব ইনকুয়ারি অ্যাক্ট, ১৯৫৬’ অনুসারে তদন্তকাজ সম্পন্ন করে কমিশনকে আগামী ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গুম হওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত খুঁজে বের করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেবে এবং গুমের সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।