Happy New Year 2024
সবাইকে ইংরেজি নববর্ষের নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে।
বর্ণিল আয়োজনে নতুন সাজে সজ্জিত বিশ্ব
বিশ্বের মানুষ জমকালো আয়োজনে বরণ করে নিলো ‘নতুন বছর ২০২৩’ সালকে। ঘড়ির কাঁটার সেকেন্ড ১২-তে পৌঁছা মাত্রই রঙিন আলোয় ভরে ওঠে বিশ্বের পুরো আকাশ। ফানুস আর আতশবাজিতে মেতে ওঠে ছোট বড় সবাই।
এডিনবার্গে, শহরের বিশ্ববিখ্যাত হোগমানে পার্টিতে অংশ নিতে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। তিন বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ফিরে এসেছে এ উৎসব।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের অপেরা হাউস ও হারবার ব্রিজ এলাকায় ১০ মিনিট ধরে আতশবাজি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। কোভিড মহামারির জন্য অস্ট্রেলিয়ায় এর আগের দুবছরে অনাড়ম্বরভাবে নতুন বছর উদযাপন হয়েছিল ।
রাশিয়া ও ইউক্রেনে বর্ষবরণ উদযাপনের তেমন আয়োজন ছিল না এবার। তবে ইউক্রেন ২০২৩ সালে লড়াই চালিয়ে যাবে এবং যেকোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত আছে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। নববর্ষের আগে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, এটি হবে প্রত্যাবর্তনের বছর।
কোভিড -১৯ ভ্যাকসিন কার্যক্রম বহু দেশে করোনায় মৃত্যু নিয়ন্ত্রণে এনেছে। ঠিক এ সময়ে করোনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে চীনে। চীনের সরকার জিরো কোভিড পলিসি শিথিল করার পরপরই হাসপাতালগুলোতে রোগীদের উপচেপড়া ভিড়। সুতরাং নববর্ষ উদযাপনের তেমন কোনো আয়োজন ছিল না চীনেরও। তবুও ছোট পরিসরে হলেও বিভিন্ন শহরে থেমে নেই বর্ষবরণের উৎসব।
এ ছাড়া বিশ্বের আরও অনেক দেশেই নানা আয়োজনে স্বাগত জানায় ২০২৩ সালকে।
নতুন বই বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
২০২৪ শিক্ষাবর্ষের বিভিন্ন স্তরের শিার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে নতুন পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হল থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে এ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মণির সভাপতিত্বে নতুন বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
নিয়ম অনুযায়ী, নতুন বছরের প্রথম দিন শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আলাদাভাবে কেন্দ্রীয় পাঠ্যবই উৎসব উদযাপন করবে।
জানা গেছে, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে মোট ৩ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার ৩৫৪ শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মধ্যে ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭টি পাঠ্যবই ও শিক্ষক সহায়িকা (টিজি) বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিকে ৩০ লাখ ৮০ হাজার ২০৫ শিক্ষার্থী পাবে ৬১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭৮টি পাঠ্যবই। প্রাথমিকে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১ কোটি ৮২ লাখ ৫৫ হাজার ২৮৪ জনকে দেওয়া হবে ৮ কোটি ৭৪ লাখ ৪ হাজার ৬৯৭ পাঠ্যবই। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৮৫ হাজার ৭২২ শিক্ষার্থীর জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার ৩১টি বই। এ ছাড়া মাদ্রাসার ইবতেদায়ি প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৩০ লাখ ৯৬ হাজার ৬০৮ শিক্ষার্থীকে দেওয়া হবে ২ কোটি ৭১ লাখ ৮৭ হাজার ৭৭৬ পাঠ্যবই।
মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ১ কোটি ৪ লাখ ৯০ হাজার ১০৭ শিক্ষার্থী পাবে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৬১ হাজার ৭৬৭ পাঠ্যবই। মাদ্রাসার ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ২৪ লাখ ২৩ হাজার ৩৪৮ জনের মাঝে বিতরণ করা হবে ৪ কোটি ১৪ লাখ ৪৭ হাজার ৬৪২টি পাঠ্যবই। এ ছাড়া ইংরেজি ভার্সনের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ১ লাখ ৭৩ হাজার ৮৫৫ শিক্ষার্থী ১১ লাখ ৭২ হাজার ৫৭টি, কারিগরিতে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ২ লাখ ৪৪ হাজার ৫৩৪ শিক্ষার্থী ৩৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭০২টি, এসএসসি ভোকেশনালের ৬ হাজার ১৫ শিক্ষার্থী ১ লাখ ৭৯ হাজার ২৯৫ পাঠ্যবই এবং দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে ৭২৮টি বই। শিক্ষকদের জন্য সহায়িকা দেওয়া হবে ৪০ লাখ ৯৬ হাজার ৬২৮টি।
ব্যাংকিং খাত থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাত হয়েছে: সিপিডি
২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২৪টি বড় ধরনের ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাত থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকার বেশি আত্মসাত হয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। ২০০৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংকলন করে আর্থিক খাত থেকে ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডির নিজস্ব কার্যালয়ে চলতি অর্থবছরে দেশের অর্থনীতি নিয়ে পর্যবেক্ষণ জানাতে প্রতিষ্ঠানটির সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতের বড় ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকার বেশি পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের কথা বলা হয়েছে। তার মতে, দেশের ব্যাংকিং খাত মুষ্টিমেয় পুঁজিপতিদের হাতে পড়েছে। তারা আধিপত্য বিস্তারে ব্যাংকগুলোকে বাহন হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
সিপিডি বলছে, খেলাপি ঋণ (এনপিএল) এখনো অনিয়ন্ত্রিত। এটি আর্থিক খাতের জন্য হুমকি। সুশাসন ও সংস্কারের অভাবে দেশের ব্যাংকিং খাত ধারাবাহিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। খেলাপি ঋণের উচ্চহার ও অর্থনৈতিক সূচকগুলো নিম্নমুখী হওয়ায় এর দুর্বলতাগুলো প্রকাশ পেয়েছে। এগুলো সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে। দুঃখজনকভাবে ব্যাংকিং খাতকে রায় সরকারের অঙ্গীকার পূরণ হচ্ছে না,’ উলেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে সেগুলো যথেষ্ট নয়।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১১-২০১২ অর্থবছর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪২ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে এক লাখ ৫৬ হাজার ৪০ কোটি টাকা হয়েছে। তবে বিশেষভাবে উলেখ করা ঋণ, শ্রেণিকরণে আদালতের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ঋণ ও পুনঃতফসিল করা ঋণ যোগ করা হলে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও অনেক বেশি হবে বলেও জানিয়েছে সিপিডি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থনীতি অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। যা কমে যাওয়ার লণ দেখা যাচ্ছে না, এমনকি নির্বাচনের পরেও না। নীতি নির্ধারকদের প্রধান কাজ হওয়া উচিত বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা। উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিম্ন-আয়ের মানুষের ক্রয়মতা খেয়ে ফেলছে। বাজার কারসাজি এবং সিন্ডিকেট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে। অর্থনীতি এখন বহুবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে এবং সত্যিকার অর্থে একটি সন্ধিণে দাঁড়িয়ে আছে। একমাত্র আশা, নীতি নির্ধারকরা এটি বুঝবেন এবং স্বীকার করবেন যে, গতানুগতিক পন্থায় কাজ হবে না। কেবল নি:স্বার্থ শক্তিশালী রাজনৈতিক নেতৃত্ব সংস্কারের কঠিন পথে যেতে পারে এবং অর্থনীতিকে উদ্ধার করতে পারে।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে রাজনৈতিক নেতৃত্বের উচ্চ পর্যায় থেকে পদক্ষেপ দরকার। উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি বন্ধে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রয়োজন, যাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে পারেন। শ্রম ইস্যুতে পশ্চিমা দেশগুলোর বিধিনিষেধের শঙ্কা দূর করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত